প্রমাণিত হয়েছে- ইভিএমে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব: তথ্যমন্ত্রী
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ইভিএমে যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, তা বগুড়া উপ-নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সম্মেলন কক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভায় অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। উপ-নির্বাচনে জয়লাভ করায় বিএনপিকে অভিনন্দন জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ইভিএম এ যে সুষ্ঠ ও নিরাপেক্ষ নির্বাচন হয়, তা এই উপনির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময়ে অতীতের সকল নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে। আশা করছি বিএনপি আর ইভিএম এর বিরুদ্ধে কথা বলবে না। বগুড়া-৬ (সদর) আসনে উপনির্বাচন গত সোমবার অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী গোলাম মো. সিরাজ জয়লাভ করেছেন। ইভিএমে ভোট শেষ হওয়ার সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহাবুব আলম শাহ ফলাফল ঘোষণা করেন। ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) সম্প্রচার নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সে দেশে বিটিভি দেখার সকল আয়োজন শেষ হয়েছে। আজ একটি টেকনিক্যাল কমিটি ভারতে যাচ্ছে। কবে থেকে ভারতে বিটিভি’র আনুষ্ঠানিকভাবে সম্প্রচার শুরু করবো, আমরা জুলাই মাসে দিনক্ষণ ঠিক করবো। বিদেশী চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচারের বিষয়ে করা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে ২০০৬ সালে একটি আইন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই আইন বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা সেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন চ্যানেল বন্ধ করা আমাদের লক্ষ্য নয়। আইন অনুযায়ী যাতে চ্যানেল গুলো চালানো হয় সে ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর মিলনায়তনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের তরুণরা সুযোগ পেলে নতুন নতুন আবিষ্কার করে বিশ্বকে নাড়িয়ে দিতে পারে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের তরুণরা অনেক কিছু আবিষ্কার করছে। যা বিশ্বের কোথাও আবিষ্কার হয়নি। আমাদের তরুণদের সহযোগিতা ও উৎসাহী করলে তারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিতে পারে। বিজ্ঞান গবেষণায় বরাদ্ধের কথা উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ। তার স্বামী ড. ওয়াজেদ আলী ছিলেন পরমাণুশক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান। তার সঙ্গে সংসার করতে গিয়ে তিনি নিজেও একজন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষে পরিণত হয়েছেন এবং তার সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় একজন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ। তাই বিজ্ঞান গবেষণায় অর্থ বরাদ্দের বাড়ানোর কথা তিনি নিজেই বলেন। তরুণদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। তারাই ভবিষ্যতের বাংলাদেশ রচনা করবে। ২০৪১ সাল নাগাদ আমরা যে লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই, তরুণরা আমাদের সেই লক্ষ্যে নিয়ে যাবে। সেজন্য তরুণদের স্বপ্ন থাকতে হবে। স্বপ্নহীন মানুষ বেশিদূর এগোতে পারে না। মন্ত্রী আরো বলেন, শিক্ষার্থী অভিভাবক ও শিক্ষকদের আমি অনুরোধ করবো, আমরা মেধাবী মূল্যবোধসম্পন্ন ও দেশাত্মবোধ জাগ্রত জাঁতি গঠনে মনোযোগী হই। এই তিনটি সমন্বয় ছাড়া পরিপূর্ণ মানুষ হওয়া সম্ভব নয়। কারণ উন্নত জাঁতি গঠনে উন্নত মানুষ প্রয়োজন। বক্তব্যের শেষে মন্ত্রী ৪০তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ, তৃতীয় জাতীয় বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড এবং তৃতীয় জাতীয় বিজ্ঞান বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ঘোষণা করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ইতি রাণী পোদ্দার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাদুঘরের ভারপ্রাপ্ত মহা-পরিচালক মো. নুরুল আলম। তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে প্রায় ৬শ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। জাতীয় বিজ্ঞান মেলায় সিনিয়র, জুনিয়র ও বিশেষ গ্রুপে প্রথম স্থান করেন মোট ১৯৮ জন। তৃতীয় জাতীয় বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে অংশ নেন সিনিয়র ও জুনিয়র গ্রুপে মোট ১২৬ জন। বিজ্ঞান বিশয়ক কুইজ প্রতিযোগিতায় মাধ্যমিক পর্যায়ে ৯৬ জন অংশ নেন।